সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

সুন্দরবনের হাতছানি ২য় পর্ব বেণুবর্ণা অধিকারী


অনেক ক্লান্ত থাকায় রাতে তাড়াতাড়ি খেয়েই ঘুমিয়ে গেলাম। পরেরদিন ভোর ৫টায় ঘুম ভেঙ্গে গেল লঞ্চ চলার ঘরঘর শব্দে।
জেগে উঠলাম ৩ জনেই। মনে হলো নদীবক্ষে ☀ দেখা না হলে জীবনটাই অধরা। আমরা রুম থেকে বেরিয়ে পুরো লঞ্চের চারদিকে চক্কর দিচ্ছি, আসলে থইথই জলের পূর্ব-পশ্চিম বোঝাই মুশকিল।
সময় পেরিয়ে যাচ্ছে কিন্তু মামার দেখা নেই, বাঘমামার মতই অধরা। তবে একটা বিষয় আবিস্কার করলাম বনভূমিতে সূর্যোদয় বা সূর্যাস্ত সেভাবে দেখা যায় না, ওরা গাছের আড়ালেই হারিয়ে যায়।
একফাঁকে ক্যান্টিনে গিয়ে ভোরের চা, বিস্কুট খেয়ে এলাম, আর রোকেয়াপুর জন্য নিয়েও এলাম। অগত্যা ফিরে কিছুক্ষণ গড়াগড়ি দিয়ে নাস্তা খেয়ে নিলাম পেট ভরে। নাস্তা ছিল জম্পেস। খিচুড়ি, বেগুণ ভাজা, ডিম ভুনা আর স্পেশাল ছিল আমের আচার পেয়াজ মরিচ দিয়ে ভর্তা।
একসময় লঞ্চ এসে থামল কটকায়। আমরা দ্রুত রেডি হয়ে ছোট নৌকা করে কটকা বনভূমি দেখতে রওনা দিলাম। এটা মংলা বন্দর থেকে ৯০ কিমি দূরে।
এটাকে জামতলা বিচও বলে অনেকে। প্রায় ৩ কিমি হেঁটে বিচে যেতে হয়। বনের ভেতর হাঁটতে হাঁটতে কত বিচিত্র গাছ দেখছিলাম। গাইড বারবার তাড়া দিচ্ছিল কিন্তু আমিতো আসলে গিয়েছি গাছ দেখতেই।
যাক পথিমধ্যে বানর, হরিণের সাথে দেখা হলো। শুরুতেই টাইগার ফার্ণের ঝোপ এই কটকায়। অনেক জাম গাছ লাগানো হয়েছে এখানে। তাই হয়তো জামতলা নামকরণ।
আসাযাওয়া মিলে ৬ কিমি। রোকেয়া আপুকে স্যালুট এমন দূর্গম যাত্রায় উনিও সমতালে হেঁটেছেন।
ক্রমশ:

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

শুষনি শাক চেনেন কি?

শুষনি শাক (Marsilea minuta)  হাইপারটেনশন ও ঘুমজনিত সমস্যার মহৌষধ হিসেবে শুসনি শাক ব্যবহার করেন ময়মনসিংহের গারো ও কোচ উপজাতিরা। তারা এর রস ব্যবহার করেন কাশি ও শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগের ওষুধ হিসেবে। এটিকে শাক হিসেবেও রান্না করে খান তারা। ডঃ অসীমা চাটার্জী এই শাক থেকে এপিলেপ্সির ঔষধ আবিস্কারের পেপার বের করেছেন। বাংলাদেশের সর্বত্রই এ উদ্ভিদটি পাওয়া যায়। অনেকে শুষনী আর আমরুলি শাককে একই মনে করেন। আসলে শুষনি শাকে পাতা ৪ ভাজ, কিন্তু আমরুলি হলো ৩। আরেকটা পার্থক্য হলো শুষনী শাক টক স্বাদযুক্ত নয়, কিন্তু আমরুলি টক। এর বৈজ্ঞানিক নাম Marsilea minuta  আমরুল শাক থেকে শুষনি শাক পাতা আকারে বড়। তাছাড়া আমরুল লতানে ছোট গুল্ম উদ্ভিদ হলেও শুষনি সেরকমটি মোটেও নয়। শুষনি শাক

বৃক্ষকথা, Brikkho-Kotha: পাদাউকের প্রতি ভালবাসা

বৃক্ষকথা, Brikkho-Kotha: পাদাউকের প্রতি ভালবাসা : পাদাউক গাছ মুগ্ধ হতাম যার বিশালতা আর পাতার বিন্যাসে, কল্পনা ছিল তার ফুল না জানি কেমন হবে? ভর দুপুরে একরাশ রৌদ্র গায়ে মেখে ছুটে গেলাম সেই...

আমার কানাইবাঁশি

বেণুবর্ণা অধিকারী যে রঙ ঈর্ষনীয় অনেক ফুলের কাছে। অথচ সে খুবই ক্ষুদ্র, অবহেলিত। " ফুল বলে ধন্য আমি, ধন্য আমি মাটির 'পরে" এটা কানছিঁড়া/ কানাইবাঁশি/ঘাসফুল/কানশিরা/ কানদুলি/ কানাইলতা। এর বৈজ্ঞানিক নাম Commelina benghalensis. নানাবিধ ঔষধি গুণসম্পন্ন এই ক্ষুদে গাছ। মূলতঃ জীবানু নাশক গুল্ম। কানের ইনফেকশনে বা চোখের অঞ্জলি হলে এর রস করে দিলে উপশম হয়, গাছকে একটু গরম করে তারপর রস বের করে দিতে হয়। এছাড়া কুষ্ঠ, একজিমা, দাদ রোগেও এর প্রচলন আছে। পোকার আক্রমনের প্রদাহে এর রস লাগালে দ্রুত আরোগ্য হয়। Commelinaceae পরিবারের গাছ। অনেকে একে জোনাকি শাক বা পাতা বলে থাকে। নরম কাণ্ড বিশিষ্ট এই গাছ ছায়ায় নিজেদের কলোনী করে বাস করে। পাতার গোড়ায় ছোট্ট নীল ফুল আর এর পাতার সবুজতা মনকে সজীব করে। অনেকেই একে শাক হিসেবে খেয়ে থাকেন। তবে কি কারণে খান এবং খেতে কেমন জানিনা। এর আরো কোন ব্যবহার কি আছে?