সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

সুন্দরবনের হাতছানি ৩য় পর্ব বেণুবর্ণা অধিকারী

https://www.facebook.com/groups/212029772564407/permalink/1805967283170640 দুপুরে ফিরে খেয়ে একটু রেস্ট নিয়েই কটকার শরণখোলা রেঞ্জে হরিণের বিচরণ কেন্দ্র দেখাতে নিয়ে গেল। গ্রুপে ঘুরতে গেলে আসলে নিজের ইচ্ছেমত ঘুরার অবকাশ নেই। শুধু দৌঁড়ের উপর ছুটতে হয়। এখানে গিয়ে আমার আর হরিণ দেখতে ইচ্ছে করেনি। কারণ দুপুরেই একঝাক হরিণের ছুটাছুটি দেখেছিলাম ফেরার পথে। তাই আমি ইচ্ছে করেই বললাম আপনারা যান, আমি এখানে এই বীচের ধারে কিছুক্ষণ বসতে চাই। রোকেয়াপুকেও বললাম থেকে যেতে , কারণ দুপুরেই প্রায় ৬ কিমি হেঁটেছেন। এখানে ততটা বাঘের ভয় নেই, আশেপাশে কয়েকটা অফিস দেখলাম । আমি মহানন্দে বীচের কাছে গিয়ে অন্য ধরণের সুখ পেলাম। বিচে অনেক বস্তা ফেলানো আছে, কিন্তু কক্সবাজারের মত বালির বীচ না, কাঁদাযুক্ত।কাঁদায় অনেকে পড়ে গিয়েছে দেখলাম। তাই রোকেয়া আপুকে বীচে আসতে নিষেধ করলাম। আমি খুব সাবধানেই পানির কাছে গেলাম। কিছুক্ষণ পরেই সূর্যিমামার বিদায়ের রক্তিম আভায় সারা বনভূমি লাল হয়ে উঠলো। এইখানে সাগরের পাড়ে সূর্যাস্ত অসাধারণ হয়ে ধরা দিল। এক সময় সন্ধ্যা নেমে এলো, আমরা ফিরে এলাম লঞ্চে। বিকেলের মজাদার নাস্তা খেয়ে রুমে ফিরে এলাম, ফ্রেশ হ...
সাম্প্রতিক পোস্টগুলি

সুন্দরবনের হাতছানি ২য় পর্ব বেণুবর্ণা অধিকারী

অনেক ক্লান্ত থাকায় রাতে তাড়াতাড়ি খেয়েই ঘুমিয়ে গেলাম। পরেরদিন ভোর ৫টায় ঘুম ভেঙ্গে গেল লঞ্চ চলার ঘরঘর শব্দে। জেগে উঠলাম ৩ জনেই। মনে হলো নদীবক্ষে দেখা না হলে জীবনটাই অধরা। আমরা রুম থেকে বেরিয়ে পুরো লঞ্চের চারদিকে চক্কর দিচ্ছি, আসলে থইথই জলের পূর্ব-পশ্চিম বোঝাই মুশকিল। সময় পেরিয়ে যাচ্ছে কিন্তু মামার দেখা নেই, বাঘমামার মতই অধরা। তবে একটা বিষয় আবিস্কার করলাম বনভূমিতে সূর্যোদয় বা সূর্যাস্ত সেভাবে দেখা যায় না, ওরা গাছের আড়ালেই হারিয়ে যায়। একফাঁকে ক্যান্টিনে গিয়ে ভোরের চা, বিস্কুট খেয়ে এলাম, আর রোকেয়াপুর জন্য নিয়েও এলাম। অগত্যা ফিরে কিছুক্ষণ গড়াগড়ি দিয়ে নাস্তা খেয়ে নিলাম পেট ভরে। নাস্তা ছিল জম্পেস। খিচুড়ি, বেগুণ ভাজা, ডিম ভুনা আর স্পেশাল ছিল আমের আচার পেয়াজ মরিচ দিয়ে ভর্তা। একসময় লঞ্চ এসে থামল কটকায়। আমরা দ্রুত রেডি হয়ে ছোট নৌকা করে কটকা বনভূমি দেখতে রওনা দিলাম। এটা মংলা বন্দর থেকে ৯০ কিমি দূরে। এটাকে জামতলা বিচও বলে অনেকে। প্রায় ৩ কিমি হেঁটে বিচে যেতে হয়। বনের ভেতর হাঁটতে হাঁটতে কত বিচিত্র গাছ দেখছিলাম। গাইড বারবার তাড়া দিচ্ছিল কিন্তু আমিতো আসলে গিয়েছি গাছ দেখতেই। যাক পথিমধ্যে বানর, হরিণের...

সুন্দরবন আমার অহঙ্কার, আমার ভালবাসা

বেণুবর্ণা অধিকারী সুন্দরবন নামের ব্যাখ্যা নিয়ে নানান মত রয়েছে। মত যাই থাক আমার আকর্ষনের বিষয় হতো এর উদ্ভিদ। উদ্ভিজ্জ সুন্দরবনের গাছপালার অধিকাংশই ম্যানগ্রোভ ধরনের এবং এখানে রয়েছে বৃক্ষ, লতাগুল্ম, ঘাস, পরগাছা এবং আরোহী উদ্ভিদসহ নানা ধরনের উদ্ভিদ। সুন্দরবনে এখনো যেতে পারিনি সেভাবে, শুধু করমজলে গিয়েছি। তাই সুন্দরবনের কাছে অপরাধবোধ থেকেই তাকে পাঠ করে আত্মীকরণ করলাম। নিশ্চয় সময় ও সুযোগ পেলে আমি সুন্দরবনে কয়েকদিন থাকব। ৩ দিনের কমার্শিয়াল ট্যুর করে এই ইচ্ছে পূরণ হবে না। পৃথিবীর অন্য অঞ্চলের গাছপালা থেকে এই অঞ্চলের গাছপালার বিশেষত্ব হল, এখানকার প্রায় সব গাছই লবণ সহ্য করতে পারে। দ্বিতীয় বিশেষত্ব হল, এই গাছগুলো নরম কাদার ওপর জন্মায়। তৃতীয়ত, এই সকল গাছ প্রবল বাতাস এবং প্রচণ্ড স্রোতে অসংখ্য শিকড়ের সাহায্যে এই নরম মাটির ওপর সহজেই দাঁড়িয়ে থাকতে পারে। জোয়ারের পানিতে গাছের গোঁড়া সবসময় ধুয়ে গেলেও গাছের কোনো ক্ষতি হয়না। বাতাস থেকে অক্সিজেন ও জলীয় বাষ্প নেওয়ার জন্য এই গাছেদের শূলের মতো সূচালো শ্বাসমূল থাকে। ১৯০৩ সালে ডি. প্রেইন সুন্দরবনের গাছপালার উপর লিখিত বইয়ে ২৪৫ গণের অধীনে ৩৩৪টি উদ...

"কচুরিপানা বোঝা নয় সম্পদ"

বেণুবর্ণা অধিকারী দেশে কচুরিপানার ব্যবহার না হওয়ায় বিজ্ঞানী ড. মহীউদ্দিন আক্ষেপ করে বলেছেন “হায়রে কচুরিপানা বাংলার কৃষক তোরে চিনল না”। কচুরিপানা হলো ভাসমান এমন একটি প্রাকৃতিক জলজ উদ্ভিদ। অন্য দেশ থেকে এই দেশে এসে সে আমাদের অনেকের কাছে আগ্রাসী জলজ গাছ হিসেবে আখ্যায়িত হয়েছে। কারণ গ্রীষ্মমন্ডলীয় এলাকায় এটি খুব দ্রুত বংশবিস্তার করে, এমনকি ৬ দিনেরও কম সময়ে সংখ্যা দ্বিগুন হয়ে যায়। ফুল ফোটার ১-২ দিন পর শুকিয়ে যায়। সকল ফুল শুকিয়ে যাওয়ার ১৮ দিন পর বীজগুলো বিমুক্ত হয়। ৫০ দিনের মধ্যে প্রতিটি ফুল হতে প্রায় ১০০০ নতুন কচুরিপানার জন্ম হয়। একটি গাছ থেকে ৫০০০ এর অধিক বীজ উৎপন্ন হয়, এই বীজ ৩০ বছর পর্যন্ত সুপ্ত অবস্থায় থাকতে পারে। এই ভয়ঙ্কর আগ্রাসী কচুরিপানাকে দূর করা মোটেও সম্ভব না যতদিন না এটাকে আমরা উপকারী গাছ হিসেবে ব্যবহার না করবো। আমরা যখনই এই পানাকে কাজে লাগাতে পারবো তখনই এই গাছ কমে যাবে। সবকিছুরই ভাল-মন্দ দুই দিকই রয়েছে। ভাল দিকটিকে ফুটিয়ে তোলা চ্যালেঞ্জ। কচুরিপানা যেমন ক্ষতিকর এবং নিয়ন্ত্রণ আবশ্যক, তেমনই এর উপযুক্ত ব্যবহারে সমৃদ্ধ অর্থনীতি গড়ে তোলা সম্ভব। পৃথিবীর বেশ কয়েকটি...

এক নজরে বলধা

বেণুবর্ণা অধিকারী বৃক্ষ বা উদ্যান শুধু পরিবেশ ভারসাম্য নয়, আমাদের সৌন্দর্য চেতনা গঠনেও এর বিরাট ভূমিকা। আমাদের মনোজগৎ সাজিয়ে তুলতে সবুজ ও সুন্দরের কোন জুড়ি নেই। শুধু টাকা পয়সা থাকলেই হয় না এর গঠনমূলক ব্যবহার করতে জানাও একটা শিল্প। যা করেছেন ১৯৩৬ সালে জমিদার নরেন্দ্র নারায়ন রায়। তবে বলধা বাগান গড়ার আগে ঢাকার পুরাতন বিমান বন্দরের উল্টা দিকে তিনি নির্মান করেন নিমফ হাউস। গ্রীক দেবীর নামানুসারে নির্মিত অনিন্দ্য সুন্দর এই ভবনে তিনি অর্জুন সহ বহু নাগলিঙ্গম গাছ লাগিয়েছিলেন। বৃটিশ সরকার জমিটি অধিগ্রহন করলে তিনি ওয়ারিতে বলধা বাগানের জমিটি ক্রয় করেন। বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী বলধার জমদার ছিলেন রাজ কিশোর রায় চৌধুরী। তার দত্তক পুত্র ছিলেন জমিদার হরেন্দ্র নারায়ন রায় চৌধুরী । তিনি গাজীপুরের বলধা জমিদার বাড়িটি নির্মান করেন। তবে নরেন্দ্র নারায়ন রায় চৌধুরী যখন জমিদার হন ভীষন দেনার ভার মাথায়। স্বীয় বুদ্ধি আর মেধার ফলে নরেন্দ্র নারায়ন রায় চৌধুরী ধীরে ধীরে সেই অবস্থার উত্তরন ঘটান এবং প্রচুর ধন সম্পদের মালিক হন। জমিদারির বাইরেও তাঁর প্রচুর ধন-সম্পদ ছিল। বলধা গা...

আমার কানাইবাঁশি

বেণুবর্ণা অধিকারী যে রঙ ঈর্ষনীয় অনেক ফুলের কাছে। অথচ সে খুবই ক্ষুদ্র, অবহেলিত। " ফুল বলে ধন্য আমি, ধন্য আমি মাটির 'পরে" এটা কানছিঁড়া/ কানাইবাঁশি/ঘাসফুল/কানশিরা/ কানদুলি/ কানাইলতা। এর বৈজ্ঞানিক নাম Commelina benghalensis. নানাবিধ ঔষধি গুণসম্পন্ন এই ক্ষুদে গাছ। মূলতঃ জীবানু নাশক গুল্ম। কানের ইনফেকশনে বা চোখের অঞ্জলি হলে এর রস করে দিলে উপশম হয়, গাছকে একটু গরম করে তারপর রস বের করে দিতে হয়। এছাড়া কুষ্ঠ, একজিমা, দাদ রোগেও এর প্রচলন আছে। পোকার আক্রমনের প্রদাহে এর রস লাগালে দ্রুত আরোগ্য হয়। Commelinaceae পরিবারের গাছ। অনেকে একে জোনাকি শাক বা পাতা বলে থাকে। নরম কাণ্ড বিশিষ্ট এই গাছ ছায়ায় নিজেদের কলোনী করে বাস করে। পাতার গোড়ায় ছোট্ট নীল ফুল আর এর পাতার সবুজতা মনকে সজীব করে। অনেকেই একে শাক হিসেবে খেয়ে থাকেন। তবে কি কারণে খান এবং খেতে কেমন জানিনা। এর আরো কোন ব্যবহার কি আছে?