সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

Piperaceae পরিবারের পরিচিত গাছ

একই পরিবারের ৪ ধরণের লতা, এদের পরিবার হলো Piperaceae. এরা আমাদের পরিচিত লতা, যার ছবি আমরা দেখি বা ব্যবহার করি।

১) গোলমরিচ, বৈজ্ঞানিক নাম Piper nigrum. মশল্লা হিসেবে প্রায় সব দেশেই এর প্রচলন আছে। কারণ এর রয়েছে যাদুকরী ক্ষমতা যা শরীরের মেদ ঝরাতে সাহায্য করে। অন্ত্রের হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড নিঃসরণ বাড়িয়ে হজমে সাহায্য করে। এছাড়া
কফ-ঠান্ডাজনিত সমস্যা দূর করে।
এতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে, যা উচ্চচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
তাহলে বুঝতেই পারছেন ছোট্ট এই কালো দানার কি জাদু ক্ষমতা। তাই দেরি না করে এখন থেকেই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখুন গোলমরিচ।

২) চইঝাল, বৈজ্ঞানিক নাম Piper chaba. চুইলতার শিকড়, কাণ্ড, পাতা, ফুল- ফল সবই ভেষজ গুণসম্পন্ন। এছাড়াও মসলা হিসেবেও এটি ব্যবহৃত হয়। তবে ঝাল হিসেবে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় হাঁসের মাংস ও গরুর মাংস রান্না করতে।
মূলত,রান্নার জন্যে চুইঝালের কাণ্ড ব্যবহার করা হয়। এরও অনেক অনেক ঔষুধি গুণ আছে যা এর আগে অনেক লেখা হয়েছে।

৩) পিপুল, বৈজ্ঞানিক নাম Piper longum.
গাছটি এ দেশে দুষ্প্রাপ্য নয়। কিন্তু এর ব্যবহার সম্পর্কে আমাদের ধারণা কম। ঔষধার্থে পিপুলগাছের মূল ও অপক্ব ফল ব্যবহার করা হয়। পিপুল ফল স্বগোত্রীয় গোলমরিচের চেয়ে বেশি ঝাল। এ জন্য ভেষজের চেয়ে মসলা ও খাদ্য সংরক্ষণের কাজে বেশি ব্যবহার করা হয়। পিপুলের বীজ পপি বীজের মতো সূক্ষ্ম কণাবিশিষ্ট।

৪) এছাড়া পান গাছও একই পরিবারের গাছ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Piper betle. জেনে নেয়া যাক পানের নানান উপকারিতার কথা।

১) পাচন শক্তি বাড়ায় মানে হজম বাড়ায়
২) গলার সমস্যায় পান খুব উপকারী, আওয়াজ পরিস্কার করতে সাহায্য করে
৩) রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে
৪) খেলে মুখের স্বাদ ফিরে আসে
৫) হৃদস্পন্দন নিয়ন্ত্রণ করে ৬) পান খেলে পেট পরিষ্কার হয়
৭) সর্দি কাশি হলে পানের রসের সাথে মধু মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়
৮) পানের সাথে গোলমরিচ, লবঙ্গ মিশিয়ে খেলে কাশি কমে যায়
৯) মুখে ঘা হলে পানের মধ্যে কর্পুর দিয়ে চিবিয়ে খেয়ে বার বার পিক ফেললে লাভ পাওয়া যায়
তবে এরসাথে সুপারি, জর্দা,খয়ের, সাদাপাতা না খাওয়াই ভাল।

বৃক্ষবন্ধু Habib Ara Merry র বাগান থেকে ছবিগুলো তুলেছি। ওর বাসায় পান গাছ না থাকায় গ্রুপের @চয়ন এর পোস্টের ছবি দিলাম



মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

শুষনি শাক চেনেন কি?

শুষনি শাক (Marsilea minuta)  হাইপারটেনশন ও ঘুমজনিত সমস্যার মহৌষধ হিসেবে শুসনি শাক ব্যবহার করেন ময়মনসিংহের গারো ও কোচ উপজাতিরা। তারা এর রস ব্যবহার করেন কাশি ও শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগের ওষুধ হিসেবে। এটিকে শাক হিসেবেও রান্না করে খান তারা। ডঃ অসীমা চাটার্জী এই শাক থেকে এপিলেপ্সির ঔষধ আবিস্কারের পেপার বের করেছেন। বাংলাদেশের সর্বত্রই এ উদ্ভিদটি পাওয়া যায়। অনেকে শুষনী আর আমরুলি শাককে একই মনে করেন। আসলে শুষনি শাকে পাতা ৪ ভাজ, কিন্তু আমরুলি হলো ৩। আরেকটা পার্থক্য হলো শুষনী শাক টক স্বাদযুক্ত নয়, কিন্তু আমরুলি টক। এর বৈজ্ঞানিক নাম Marsilea minuta  আমরুল শাক থেকে শুষনি শাক পাতা আকারে বড়। তাছাড়া আমরুল লতানে ছোট গুল্ম উদ্ভিদ হলেও শুষনি সেরকমটি মোটেও নয়। শুষনি শাক

বৃক্ষকথা, Brikkho-Kotha: পাদাউকের প্রতি ভালবাসা

বৃক্ষকথা, Brikkho-Kotha: পাদাউকের প্রতি ভালবাসা : পাদাউক গাছ মুগ্ধ হতাম যার বিশালতা আর পাতার বিন্যাসে, কল্পনা ছিল তার ফুল না জানি কেমন হবে? ভর দুপুরে একরাশ রৌদ্র গায়ে মেখে ছুটে গেলাম সেই...

আমার কানাইবাঁশি

বেণুবর্ণা অধিকারী যে রঙ ঈর্ষনীয় অনেক ফুলের কাছে। অথচ সে খুবই ক্ষুদ্র, অবহেলিত। " ফুল বলে ধন্য আমি, ধন্য আমি মাটির 'পরে" এটা কানছিঁড়া/ কানাইবাঁশি/ঘাসফুল/কানশিরা/ কানদুলি/ কানাইলতা। এর বৈজ্ঞানিক নাম Commelina benghalensis. নানাবিধ ঔষধি গুণসম্পন্ন এই ক্ষুদে গাছ। মূলতঃ জীবানু নাশক গুল্ম। কানের ইনফেকশনে বা চোখের অঞ্জলি হলে এর রস করে দিলে উপশম হয়, গাছকে একটু গরম করে তারপর রস বের করে দিতে হয়। এছাড়া কুষ্ঠ, একজিমা, দাদ রোগেও এর প্রচলন আছে। পোকার আক্রমনের প্রদাহে এর রস লাগালে দ্রুত আরোগ্য হয়। Commelinaceae পরিবারের গাছ। অনেকে একে জোনাকি শাক বা পাতা বলে থাকে। নরম কাণ্ড বিশিষ্ট এই গাছ ছায়ায় নিজেদের কলোনী করে বাস করে। পাতার গোড়ায় ছোট্ট নীল ফুল আর এর পাতার সবুজতা মনকে সজীব করে। অনেকেই একে শাক হিসেবে খেয়ে থাকেন। তবে কি কারণে খান এবং খেতে কেমন জানিনা। এর আরো কোন ব্যবহার কি আছে?